০১. মেসোমশায়ের অট্টহাসি

মেসোমশায়ের অট্টহাসি

স্কুল ফাইন্যাল পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল।

চাটুজ্যেদের বোয়াকে আমাদের আড্ডা জমেছে। আমরা তিনজন আছি। সভাপতি টেনিদা, হাবুল সেন, আর আমি প্যালারাম বাঁড়ুজ্যে—পটলডাঙায় থাকি আর পটোল দিয়ে শিঙিমাছের ঝোল খাই। আমাদের চতুর্থ সদস্য ক্যাবলা এখনও এসে পৌঁছয়নি।

চারজনে পরীক্ষা দিয়েছি। লেখাপড়ায় ক্যাবলা সবচেয়ে ভালো—হেডমাস্টার বলেছেন। ও নাকি স্কলারশিপ পাবে। ঢাকাই বাঙাল হাবুল সেনটাও পেরিয়ে যাবে ফাস্ট ডিভিশনে। আমি দুবার অঙ্কের জন্যে ডিগবাজি খেয়েছি—এবার থার্ড ডিভিশনে পাশ করলেও করতে পারি। আর টেনিদা—

তার কথা না বলাই ভালো। সে ম্যাট্রিক দিয়েছে কে জানে এনট্রান্সও দিয়েছে কি না। এখন স্কুল ফাইন্যাল দিচ্ছে—এর পরে হয়তো হায়ার সেকেন্ডারিও দেবে। স্কুলের ক্লাস টেন-এ সে একেবারে মনুমেন্ট হয়ে বসে আছে—তাকে সেখান থেকে টেনে এক ইঞ্চি নড়ায় সাধ্য কার!

টেনিদা বলে, হেঁ—হেঁ–বুঝলিনে? ক্লাসে দু-একজন পুরনো লোক থাকা ভালো মানে, সব জানে-টানে আর কি! নতুন ছছাকরাদের একটু ম্যানেজ করা চাই তো!

তা নতুন ছেলেরা ম্যানেজ হচ্ছে বইকি। এমনকি টেনিদার দুদে বড়দা—যাঁর হাঁক শুনলে আমরা পালাতে পথ পাই না, তিনি সুষ্ঠু ম্যানেজড় হয়ে এসেছেন বলতে গেলে। তিন-চার বছর আগেও টেনিদার ফেলের খবর এলে চেঁচিয়ে হাট বাধাতেন, আর টেনিদার মগজে ক-আউন্স, গোবর আছে তাই নিয়ে গবেষণা করতেন। এখন তিনিও হাল ছেড়ে দিয়েছেন। টেনিদার ফেল করাটা তাঁর এমনি অভ্যাস হয়ে গেছে যে, হঠাৎ যদি পাশ করে ফেলে তা হলে সেইসঙ্গে তিনি একেবারে ফ্ল্যাট হয়ে পড়বেন।

অতএব নিশ্চিন্তে আড্ডা চলছে।

ওরই মধ্যে হতভাগ্য হাবুলটা একবার পরীক্ষার কথা তুলেছিল, টেনিদা নাক কুঁচকে বলেছিল, নেঃ—নেঃ—রেখে দে! পরীক্ষা-ফরীক্ষা সব জোচ্চুরি! কতকগুলো গাধা ছেলে গাদাগাদা বই মুখস্থ করে আর টকাটক পাশ করে যায়। পাশ না করতে পারাই সবচেয়ে শক্ত। দ্যাখ না বছরের পর বছর হলে গিয়ে বসছি, সব পেপারের অ্যাঁনসার লিখছি—তবু দ্যাখ কেউ আমাকে পাশ করাতে পারছে না। সব এগজামিনারকে ঠাণ্ডা করে দিয়েছি। বুঝলি, আসল বাহাদুরি এখানেই।

আমি বললাম, যা বলেছ। এইজন্যেই তো দুবছর তোমার শাগরেদি করছি। ছোটকাকা কান দুটো টেনে-টেনে প্রায় আধ-হাত লম্বা করে দিয়েছে—তবু ইস্কুল কামড়ে ঠিক বসে আছি!

টেনিদা বললে, চুপ কর, মেলা বকিসনি! তোর ওপরে আমার আশা-ভরসা ছিল—ভেবেছিলুম, আমার মনের মতো শিষ্য হতে পারবি তুই। কিন্তু দেখছি তুই এক-নম্বর বিশ্বাসঘাতক! কোন্ আক্কেলে অঙ্কের খাতায় ছত্রিশ নম্বর শুদ্ধ করে ফেললি? আর ফেললিই যদি, ঢ্যারা দিয়ে কেটে এলিনে কেন?

আমি ঘাড়-টাড় চুলকে বললাম, ভারি ভুল হয়ে গেছে!

টেনিদা বললে, দুনিয়াটাই নেমকহারাম! মরুক গে! কিন্তু এখন কী করা যায় বল দিকি? পরীক্ষার পর স্রেফ কলকাতায় বসে ভ্যারেন্ডা ভাজব? একটু বেড়াতে-টেড়াতে না গেলে কি ভালো লাগে?

আমি খুশি হয়ে বললাম, বেশ তো চলো না। লিলুয়ায় আমার রাঙা-পিসিমার বাড়ি আছে—দুদিন সেখানে বেশ হই-হল্লা করে—

-থাম বলছি প্যালা—থামলি?-টেনিদা দাঁত খিচিয়ে বললে, যেমন তোর ছাগলের। মতো লম্বা লম্বা কান, তেমনি ছাগলের মতো বুদ্ধি! লিলুয়া! আহা ভেবে-চিন্তে কী একখানা জায়গাই বের করলেন! তার চেয়ে হাতিবাগান বাজারে গেলে ক্ষতি কী? ছাতের ওপরে উঠে হাওয়া খেলেই বা ঠ্যাকাচ্ছে কে? যতসব পিলে রুগি নিয়ে পড়া গেছে, রামোঃ!

হাবুল সেন চিন্তা করে বললে, আর অ্যাঁকটা জায়গায় যাওন যায়। বর্ধমানে যাইবা? সেইখানে আমার বড়মামা হইল গিয়া পুলিশের ডি. এস. পি–

দুদ্দুর। সেই ধ্যাড়ধেড়ে বর্ধমান?–টেনিদা নাক কোঁচকাল : ট্রেনে চেপেছিস কি রক্ষে নেই বর্ধমানে যেতেই হবে। মানে, যে-গাড়িতেই চড়বি—ঠিক বর্ধমানে নিয়ে যাবে। সেই রেলের ঝকঝক আর পি পিঁ—প্ল্যাটফর্মে যেন রথের মেলা! তবে চাঁদির ওপরটা একবার চুলকে নিয়ে টেনিদা বললে—তবে হ্যাঁ-সীতাভোগ মিহিদানা পাওয়া যায় বটে। সেদিক থেকে বর্ধমানের প্রস্তাবটা বিবেচনা করা যেতে পারে বইকি। অন্তত লিলুয়ার চাইতে ঢের ভালো।

রাঙা-পিসিমার বাড়িকে অপমান! আমার ভারি রাগ হল।

বললাম, সে তো ভালোই হয়। তবে, বর্ধমানের মশার সাইজ প্রায় চড়ুই পাখির মতো, তাদের গোটাকয়েক মশারিতে ঢুকলে সীতাভোগ মিহিদানার মতো তোমাকেই ফলার করে ফেলবে। তা ছাড়া আমি বলে চললাম—আরও আছে। শুনলে তো, হাবুলের মামা ডি. এস. পি.। ওখানে যদি কারও সঙ্গে মারামারি বাধিয়েছ তা হলে আর কথা নেই সঙ্গে সঙ্গে হাজতে পুরে দেবে।

টেনিদা দমে গিয়ে বললে, যাঃ–যাঃ-মেলা বকিনি! কী রে হাবুল—তোর মামা কেমন লোক?

হাবুল ভেবে-টেবে বললে, তা, প্যালা নিতান্ত মিথ্যা কথা কয় নাই! আমার মামায় আবার মিলিটারিতে আছিল মিলিটারি মেজাজ

—এই সেরেছে! না—এ ঢাকার বাঙালটাকে নিয়ে পিরবার জো নেই! ওসব বিপজ্জনক মামার কাছে খামকা মরতে যাওয়া কেন? দিব্যি আছি-মিথ্যে ফ্যাচাঙের ভেতরে কে পড়তে চায় বাপু!

আলোচনাটা এ-পর্যন্ত এসেছে—হঠাৎ বেগে ক্যাবলার প্রবেশ। হাতে একঠোঙা আলুকাবলি।

—এই যে ক্যাবলা এসে পড়েছে। বলেই টেনিদা লাফিয়ে উঠল, তারপরেই চিলের মতো ছোঁ মেরে ক্যাবলার হাত থেকে কেড়ে নিলে আলু কাবলির ঠোঙাটা। প্রায় আদ্ধেকটা একেবারে মুখে পুরে দিয়ে বললে, কোথেকে কিনলি রে? তোফা বানিয়েছে তো!

আলুকাবলির শোকে ক্যাবলাকে বিমর্ষ হতে দেখা গেল না। বরং ভারি খুশি হয়ে বললে, মোড়ের মাথায় একটা লোক বিক্রি করছিল।

—এখনও আছে লোকটা? আরও আনা-চারেক নিয়ে আয় না! ক্যাবলা বললে, ধ্যাৎ, আলুকাবলি কেন? পোলাও-মুরগি চিংড়ির কাটলেট—আনারসের চাটনি-দই রসগোল্লা

টেনিদা বললে, ইস, ইস,—আর বলিসনি! এমনিতেই পেট চুঁই-ছুঁই করছে, তার ওপরে ওসব বললে একদম হার্টফেল করব।

ক্যাবলা হেসে বললে, হার্টফেল করলে তুমিই পস্তাবে! আজ রাত্তিরে আমাদের বাড়িতে এসবই রান্না হচ্ছে কিনা! আর মা তোমাদের তিনজনকে নেমন্তন্ন করতে বলে দিয়েছেন।

শুনে আমরা তিনজনেই একেবারে থ! পুরা তিন মিনিট মুখ দিয়ে একটা রা বেরুলো।

তারপর তিড়িং করে একটা লাফ দিয়ে টেনিদা বললে, সত্যি বলছিস ক্যাবলা সত্যি বলছিস? রসিকতা করছিস না তো?

ক্যাবলা বললে, রসিকতা করব কেন? রাঁচি থেকে মেসোমশাই এসেছেন যে তিনিই তো বাজার করে আনলেন।

আর মুরগি? মুরগি আছে তো? দেখিস ক্যাবলা বামুনকে আশা দিয়ে নিরাশ করিসনি! পরজন্মে তাহলে তোকে কিন্তু মুরগি হয়ে জন্মাতে হবে—খেয়াল থাকে যেন!

—সে-ভাবনা নেই। আধ-ডজন দড়িবাঁধা মুরগি উঠনে ক্যাঁক্যাঁ করছে দেখে এলাম।

ট্রিম–ট্রিম—ট্রা—লা—লা—লা—লা—

টেনিদা আনন্দে নেচে উঠল। সেইসঙ্গে আমরা তিনজন কোরাস ধরলাম। গলি দিয়ে একটি নেড়ি কুকুর আসছিল—সেটা ঘ্যাঁক করে একটা ডাক দিয়েই ল্যাজ গুটিয়ে উল্টোদিকে ছুটে পালাল।

 

রাত্তিরে খাওয়ার যা ব্যবস্থা হল—সে আর কী বলব। টেনিদার খাওয়ার বহর দেখে মনে হচ্ছিল, এর পরে ও আর এমনি উঠতে পারবে না—ক্রেনে করে তুলতে হবে। সের-দুই মাংসের সঙ্গে ডজন খানেক কাটলেট তো খেলই-এর পরে প্লেট-ফ্লেটসুষ্ঠু খেতে আরম্ভ করবে এমনি আমার মনে হল।

খাওয়ার টেবিলে আর-একজন মজার মানুষকে পাওয়া গেল। তিনি ক্যাবলার মেসোমশাই। ভদ্রলোক কত গল্পই না জানেন! একবার শিকার করতে গিয়ে বুনো মোষের ল্যাজ ধরে কেমন বনবন করে ঘুরিয়েছিলেন, সে-গল্প শুনে হাসতে-হাসতে আমাদের পেটে খিল ধরবার জো হল। আর-একবার নাকি গাছের ডাল ভেঙে সোজা বাঘের পিঠের উপর পড়ে গিয়েছিলেন বাঘ তাঁকে টপাৎ করে খেয়ে ফেলা দূরের কথা—সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান! বোধহয় ভেবেছিল তাকে ভূতে ধরেছে। এমনকি সবাই মিলে জলজ্যান্ত বাঘকে যখন খাঁচায় পুরে ফেলল—তখনও তার জ্ঞান হয়নি। শেষকালে নাকি স্মেলিং সল্ট শুকিয়ে আর মাথায় জলের ছিটে দিয়ে তবে বাঘের মূছা ভাঙাতে হয়।

খাওয়ার পর ক্যাবলাদের ছাতে বসে এইসব গল্প হচ্ছিল। ইজি-চেয়ারে বসে একটার পর একটা সিগারেট খেতে খেতে গল্প বলছিলেন ক্যাবলার মেসোমশাই—আর আমরা মাদুরে বসে শুনছিলাম। মেসোমশাইয়ের টাকের ওপর চাঁদের আলো চিকচিক করছিল-থেকে-থেকে লালচে আগুনে অদ্ভুত মনে হচ্ছিল তাঁর মুখখানা।

মেসোমশাই বললেন, ছুটিতে বেড়াতে যেতে চাও? আমি এক-জায়গায় যাওয়ার কথা বলতে পারি। অমন সুন্দর স্বাস্থ্যকর জায়গা আশেপাশে বেশি নেই।

ক্যাবলা বললে, রাঁচি?

মেসোমশাই বললেন, না—না, এখন বেজায় গরম পড়ে গেছে ওখানে? তা ছাড়া বড় ভিড়—ও সুবিধে হবে না।

টেনিদা বললে, দার্জিলিং, না শিলং?

মেসোমশাই বললেন, বেজায় শীত? গরমে পুড়তে কষ্ট হয় বটে, কিন্তু শীতে জমে যেতেই বা কী সুখ, সে আমি ভেবে পাইনে। ও-সব নয়।

আমার একটা কিছু বলার দরকার এখন। কিন্তু কিছুই মনে এল না। ফস করে বলে বসলাম, তা হলে গোবরডাঙা?

-চুপ কর বলছি প্যালা—চুপ কর!–টেনিদা দাঁত খিচোল—নিজে এক-নম্বর গোবরগণেশ-গোবরডাঙা আর লিলুয়া ছাড়া আর কী বা খুঁজে পাবি?

মেসোমশাই বললেন, থামোথামো। ও-সব নয় আমি যে-জায়গার কথা বলছি, কলকাতার লোকে তার এখনও খবর রাখে না। জায়গাটা রাঁচির কাছাকাছি বটেহাজারিবাগ আর রামগড় থেকে সেখানে যাওয়া যায়। বাস থেকে নেমে গোরুর গাড়ি চড়ে মাইল-তিনেক পথ। ভারি সুন্দর জায়গা-শাল আর মহুয়ার বন, একটা লেক। রয়েছে তাতে টলচলে নীল জল। দিনের বেলাতেই হরিণ দেখা যায়-খরগোশ আর বন-মুরগি ঘুরে বেড়ায়। কাছেই সাঁওতালদের বস্তি, দুধ আর মাংস খুব শস্তায় পাওয়া যায়—লেকেও কিছু মাছ আছে—দু-পয়সা চার পয়সা সের। আর সেইখানে পাহাড়ের একটা টিলার ওপর একটা খাসা বাংলো আমি কিনেছি। বাংলোটা এক সাহেব তৈরি করিয়েছিল বিলেত যাওয়ার আগে আমাকে বেচে দিয়ে গেছে। চমৎকার বাংলো! তার বারান্দায় বসে কতদূর পর্যন্ত যে দেখতে পাওয়া যায় ঠিক নেই। পাশেই ঝরনা বারো মাস তিরতির করে জল বইছে। ওখানে গিয়ে যদি একমাস থাকো—এই রোগা প্যাঁকাটির দল সব একেবারে ভীম-ভবানী হয়ে ফিরে আসবে।

টেনিদা পাহাড় প্রমাণ আহার করে তাকিয়ায় হেলান দিয়ে পড়েছিল, তড়াক করে উঠে বসল।

—আমরা যাব! আমরা চারজনেই!

মেসোমশাই আর-একটা সিগারেট ধরিয়ে বললেন, সে তত ভালো কথাই। কিন্তু একটা মুস্কিল আছে যে!

-কী মুস্কিল?

–কথাটা হল—ইয়ে—মানে বাড়িটার কিছু গোলমাল আছে।

—গোলমাল কিসের?

—ওখানকার সাঁওতালেরা বলে, বাড়িটা নাকি দাননা-পাওয়া। ওখানে নাকি অপদেবতার উপদ্রব হয় মধ্যে-মধ্যে। কে যেন দুম-দাম করে হেঁটে বেড়ায়—অদ্ভুতভাবে চেঁচিয়ে ওঠে—অথচ কাউকে দেখতে পাওয়া যায় না। আমি অবশ্য বাড়িটা কেনবার পরে মাত্র বার-তিনেক গেছি—তাও সকালে পৌঁছেছি, আর সন্ধেবেলায় চলে এসেছি। কাজেই রাত্তিরে ওখানে কী হয় না হয় কিছুই টের পাইনি। তাই ভাবছি-ওখানে যেতে তোমাদের সাহসে কুলোবে কি না।

টেনিদা বললে, ছোঃ! ওসব বাজে কথা! ভূত-টুত বলে কিছু নেই মেসোমশাই। আমরা চারজনেই যাব। ভূত যদি থাকেই, তাহলে তাকে একেবারে রাঁচির পাগলাগারদে পাঠিয়ে দিয়ে তবে ফিরে আসব কলকাতায়। আর

কিন্তু তারপরেই আর কিছু বলতে পারল না টেনিদা হঠাৎ থমকে গিয়ে দুহাতে হারুল সেনকে প্রাণপণে জাপটে ধরল।

হাবুল ঘাবড়ে গিয়ে বললে, আহা-হা কর কী, ছাইড়্যা দাও, ছাইড়া দাও! গলা পর্যন্ত খাইছি, প্যাটটা ফ্যাইটা যাইব যে!

টেনিদা তবু ছাড়ে না। আরও শক্ত করে হাবুলকে জাপটে ধরে বললে, ও কী—ও কীবাড়ির ছাতে ও কী!

আকাশে চাঁদটা ঢাকা পড়েছে একফালি কালো মেঘের আড়ালে। চারিদিকে একটা অদ্ভুত অন্ধকার। আর সেই অন্ধকারে পাশের বাড়িতে ছাতে কার যেন দুটো অমানুষিক চোখ দপদপ করে জ্বলছে।

আর সেই মুহূর্তে ক্যাবলার মেসোমশাই আকাশ ফাটিয়ে প্রচণ্ড অট্টহাসি করে উঠলেন। সে-হাসিতে আমার কান বোঁ-বোঁ করে উঠল, পেটের মধ্যে খটখটিয়ে নড়ে উঠল পালাজ্বরের পিলে—মনে হল মুরগি-টুরগিগুলো বুঝি পেট-ফেট চিরে কঁক করতে করতে বেরিয়ে আসবে।

এমন বিরাট কিস্তুত অট্টহাসি জীবনে আর কখনও শুনিনি।


© 2024 পুরনো বই