অপ্রকাশিত খণ্ডরচনা

এক

১। বিদ্যা বা লেখাপড়া শেখার ফলে Standard of living-এর standard বাড়বেই এবং economic condition ভালো না হলে পারিবারিক অসন্তোষ বাড়বেই।

২। Economic অবস্থা বাড়াবার উপায় একমাত্র শিক্ষিত পুরুষদের industry গড়ে তোলা, ছোট দোকান করবার শিক্ষা ছেলেবেলা থেকে শিখতে হয়। B. A. পাস করার পরে ও জিনিস চলে না, ওখানে অশিক্ষাই বরং কাজের।
১২৬৪

৩। জাতের ছোট-বড় ভাঙ্গার চেষ্টা করতে হবে।

৪। মুষ্টিমেয় সমাজের মধ্যে থেকে মুষ্টিমেয় বাঙালী ভদ্রসন্তানের অপরিসীম sacrifice কাজে লাগে না। এই মুষ্টিমেয় লোকগুলি যদি সমাজের সর্বস্তরের মধ্যে থেকে আসতো, সমস্ত সমাজের সঙ্গে তার নাড়ীর যোগ থাকতো।

৫। Permanent Settlement-এর জন্যেই জমিদার, তালুকদার ও অসংখ্য মধ্যবিত্ত middlemen সমস্ত সমাজের economic অবস্থাকে বাড়তে দেয়নি—কেবলমাত্র জমি আঁকড়ে থেকে শুধু কৃষকেরাই যা-কিছু দেশের wealth সৃষ্টি করছে। বোম্বাই প্রভৃতি অঞ্চলে Permanent Settlement না থাকার জন্যই ওদেশে industry-র উন্নতি হচ্ছে। জমি কেনা ও বেশী সুদে লগ্নি কারবার করা এই হচ্ছে বাঙালার ধনী হবার একমাত্র পন্থা।

৬। কলেজের মেয়ে,—বই মুখস্থ করে, আর পরীক্ষা পাস করার চেষ্টায় ক্রমাগত রাত্রি জাগরণে শরীর-স্বাস্থ্য একেবারে ভেঙ্গে যায়—আর সব লোকসানই পূরণ হতে পারে কিন্তু যে সন্তান এদের জন্মাবে সে চিররুগ্ন হয়েই থাকবে। (‘বাতায়ন’, ১৬ বৈশাখ, ১৩৪৫)

দুই

১। সহজ বুদ্ধিই দুনিয়ায় সবচেয়ে অ-সহজ।

২। বিশেষ কাজের বিশেষ ধারা পৌনঃপুনিক ব্যবহারে দাঁড়ায় মানুষের অভ্যাসে। সেই ব্যষ্টির অভ্যস্ত কাজ ব্যাপ্ত হয়ে যখন সমষ্টিতে ছড়িয়ে পড়ে তখনই সে হয় আচার।

৩। আমাদের পূর্বপুরুষেরও পূর্বে যাঁরা, তাঁরা চিন্তা এবং বুদ্ধি দিয়ে দেখিয়েছিলেন বহু ক্লেশসাধ্য কাজের পরিণাম মঙ্গলময়।

৪। আচার-বিচার কথাটা এক নিঃশ্বাসেই বলি বটে, কিন্তু আচার জিনিসটা বুদ্ধি দিয়ে প্রবর্তিত হয়নি, তাই যুক্তি দিয়েও এর পরিবর্তন হয় না।

৫। অদৃষ্ট জিনিসটাই চিরদিন জীবনসংগ্রাম ও ধর্মের মাঝে অচ্ছেদ্য ও অফুরন্ত সেতুর শিকলের মতো জুড়ে আছে।

৬। দৃশ্যমান সকল বস্তুরই আরম্ভটা অজ্ঞেয়তত্ত্বে অদৃশ্য হয়েছে।

৭। ধর্মনিষ্ঠা অক্ষুণ্ণ রাখতে হলে ধর্মের বই কত পড়তে হয়। সমাজের উন্নতি করতে হলে, সমাজ সম্বন্ধে কত অভিজ্ঞতা দরকার। তার সমস্ত খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করতে নেই। (‘বাতায়ন’, ৬ আশ্বিন, ১৩৪৫)

॥ সমাপ্ত॥


© 2024 পুরনো বই