তোমাদের কাছে প্রায়ই আমি ভূতের গল্প, বা অ্যাডভেঞ্চারের কাহিনি বলে থাকি। কিন্তু আজ আমি তোমাদের কাছে একটি ডিটেকটিভের গল্প বলব।
এটি তোমরা বাজে গাল-গল্প বলে মনে কোরো না। ইউরোপের অস্ট্রিয়া দেশে এই সত্য ঘটনাটি ঘটেছিল। আমরা ঘটনাটি উদ্ধার করব পুলিশের নিজের ডায়ারি থেকেই।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পুলিশের সঙ্গে অস্ট্রিয়ার পুলিশের মস্ত একটি তফাত আছে, সেটিও তোমাদের জানিয়ে রাখি। অন্য-অন্য দেশের পুলিশ, চুরি-ডাকাতি-খুনের কিনারা করবার জন্যে বাইরের কারুর দরজায় গিয়ে ধরনা দেয় না। কিন্তু অস্ট্রিয়ার পুলিশ যখন কোনও গোলমেলে মামলায় পড়ে, তখন প্রায়ই সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরদের সাহায্য নিয়ে থাকে।
প্রফেসররা পুলিশকে সাহায্য করেন শুনে তোমরা বোধহয় অবাক হচ্ছ? কিন্তু এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। কারণ, অস্ট্রিয়ার ইউনিভার্সিটিতে অপরাধ-তত্ত্বের একটি বিভাগ আছে। ওই প্রফেসরেরা সেই বিভাগেই ছাত্রদের শিক্ষা দেন। ওখানকার এক-একজন প্রফেসর অপরাধ তত্ত্বে এত বেশি পণ্ডিত যে, পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ডিটেকটিভরাও তাঁদের কাছে হার মানতে বাধ্য। নীচের ঘটনাটি শুনলেই তোমরা প্রফেসরদের বাহাদুরির কিছু কিছু প্রমাণ লাভ করবে।
বিখ্যাত ভিয়েনা শহর যে অস্ট্রিয়ার রাজধানী, একথা তোমরা নিশ্চয়ই জানো। ওই ভিয়েনা শহরের পুলিশের বড়সাহেবের কাছে একদিন ডাকযোগে একটি পার্সেল এল।
পার্সেলের মোড়ক খুলেই বড়সাহেবের চক্ষুস্থির আর কি! মোড়কটি পুরোনো খবরের কাগজের। তার ভিতরে একটি চলতি সিগারেটের প্যাকেট, এবং প্যাকেটের মধ্যে রয়েছে মানুষের বাঁ-হাত থেকে কেটে নেওয়া একটি তর্জনী। দেখলেই বোঝা যায়, আঙুলটা কাটা হয়েছে, মেয়েমানুষের হাত থেকে!
পাঁচদিন পরে আবার এক পার্সেল এসে হাজির। তার মধ্যে রয়েছে স্ত্রীলোকের ডান হাত থেকে কেটে নেওয়া একটি মধ্যমাঙ্গুলি! আঙুলে আবার একটি বিয়ের আংটি!
বড়সাহেব তো হতভম্ব! এ কী ভয়ানক কাণ্ড! পুলিশের বড়সাহেব হয়ে জীবনে তিনি অনেক ভীষণ ব্যাপার দেখেছেন, কিন্তু এমন ভয়াবহ ব্যাপার তাঁর কল্পনারও অতীত! সাধারণ হত্যাকারী চুপি-চুপি খুন করে মানে-মানে কোনওরকমে পালিয়ে যেতে পারলেই বাঁচে! কিন্তু এই পার্সেল দুটো যে পাঠিয়েছে, সে এতবড় অসমসাহসী যে, নিজের পৈশাচিক কাণ্ডের নমুনা বারবার পুলিশের বড়সাহেবের গোচরে আনতেও সঙ্কুচিত নয়।
সাধারণ খবরের কাগজের মোড়ক, সাধারণ সিগারেটের প্যাকেট এবং পার্সেলের উপরের ঠিকানাও লেখা একটি নতুন টাইপরাইটারের সাহায্যে। ডাকঘরের ছাপও ভিয়েনা শহরের।
ভিয়েনা শহরে কলকাতার চেয়েও বেশি লোক বাস করে, তার জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে আঠারো লক্ষ। এতবড় শহরের লক্ষ লক্ষ বাসিন্দার ভিতর থেকে কোন শয়তান যে পুলিশের বড়সাহেবের সঙ্গে এই বীভৎস কৌতুক করছে, তা অনুমান করবার কোনও সূত্রই পার্সেলের ভিতর থেকে পাওয়া যায় না। অথচ এই পাপিষ্ঠকে তাড়াতাড়ি ধরতে না পারলে পুলিশের নিন্দার আর সীমা থাকবে না।
আর কোনও উপায় না দেখে বড়সাহেব তখনই ইউনিভার্সিটির একজন পরিচিত প্রফেসরের কাছে ছুটে গেলেন।
প্রফেসর তার বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে বসে সমস্ত ঘটনা শুনে বললেন, আঙুল দুটো দেখি!
বড়সাহেব মোড়ক, সিগারেটের প্যাকেট, কাটা-আঙুল দুটো ও আংটি বার করে টেবিলের উপরে রাখলেন।
খানিকক্ষণ মন দিয়ে পরীক্ষা করবার পর প্রফেসর বললেন, হুঁ, আঙুলের অবস্থা দেখে বেশ বোঝা যাচ্ছে, তর্জনীর পর যখন মধ্যমাঙ্গুলি কেটে নেওয়া হয়, হতভাগ্য স্ত্রীলোকটি তখনও জ্যান্ত ছিল। মড়ার দেহ থেকে কাটা আঙুল এরকম হয় না। হয়তো এখনও সে জ্যান্ত আছে! একটি জীবন্ত মেয়ের দুই হাত থেকে দুটো আঙুল কেটে নেওয়া হয়েছে, তাকে তিলে তিলে যন্ত্রণা দিয়ে খুন করা হচ্ছে।
বড়সাহেব শিউরে উঠে বললেন, ভয়ানক প্রফেসর! ভয়ানক! আপনি তাড়াতাড়ি পরীক্ষা করুন, হয়তো অভাগিনীকে এখনও আমরা বাঁচাতে পারি!
প্রফেসর আঙুলের দিকে দৃষ্টি বদ্ধ করে বললেন, আঙুল দুটো দেখে বলা যায়, এ কোনও সাধারণ ছোটলোকের মেয়ের আঙুল নয়। তারপর আঙুল দুটো যেরকম সূক্ষ্মভাবে কাটা হয়েছে, তা দেখে মনে হয়–
মনে হয়, শবব্যবচ্ছেদ করতে হত্যাকারী খুব অভ্যস্ত, আর ব্যবচ্ছেদ করবার অস্ত্রশস্ত্র তার কাছেই আছে। বড়সাহেব, আমার বিশ্বাস, হত্যাকারী হয় সাধারণ ডাক্তার নয় অস্ত্র চিকিৎসক, নয় সে শবব্যবচ্ছেদাগারে কাজ করে। কারণ, অব্যবসায়ী লোক এমন কৌশলে আঙুল কাটতে পারে না!
বড়সাহেব এতক্ষণ পরে একটা বড় সুত্র পেয়ে উৎসাহিত হয়ে উঠলেন।
প্রফেসর বললেন, এভাবে যন্ত্রণা দিয়ে যে নরহত্যা করে, সে নিশ্চয়ই নিষ্ঠুরতার ভক্ত। আংটিতে ওই সুতোটা বাঁধা কেন?
বড়সাহেব হাস্য করে বললেন, প্রফেসর, ম্যাগ্নিফাইং গ্লাস দিয়ে ও-সুতোটা অত মন দিয়ে দেখবার দরকার নেই। হাত দিয়ে না ছুঁয়ে আংটিটা তুলব বলে আমিই ওই সুতো বেঁধেছি।
প্রফেসর অতসীকাচের ভিতর দিয়ে রঙিন সুতোটা দেখতে দেখতে বললেন, সুতো আপনি বাঁধতে পারেন, কিন্তু সুতোর যে অংশ আংটির গায়ে বাঁধা ছিল, সেখানটা এমন বে-রঙা হয়ে গেছে কেন? আচ্ছা, দেখা যাক!
খানিকক্ষণ সুতোটা নিয়ে রাসায়নিক পরীক্ষা করে প্রফেসর বললেন, সুতোর ভিতরে indigotin disulphonic অ্যাসিড রয়েছে।
বড়সাহেব বিস্মিত হয়ে বললেন, ও অ্যাসিড তো আমার ছিল না! কী কী কাজে ওই অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়?
প্রফেসর বললেন, উপস্থিত ক্ষেত্রে হয়তো উল্কি তোলবার জন্যই ওই অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়েছে। হু, যা ভেবেছি তাই! এই দেখুন, কাটা মধ্যমাঙ্গুলির উপর থেকে উল্কি তোলবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু অ্যাসিডে চামড়া ক্ষয়ে গেলেও, দাগ দেখে বোঝা যায়, আঙুলে উল্কিতে আঁকা ছিল একটা ছোট্ট সাপ!
বড়সাহেব বললেন, ছোট্ট সাপ!
হাঁ বড়সাহেব! হত্যাকারী বোধহয় কোনও স্ত্রীলোকের হাতে জোর করে একটা সাপ এঁকে দিয়েছিল! সে বোধহয় বলতে চেয়েছিল, তুমি কালসাপিনির মতো দুষ্ট, তাই তোমার আঙুলে এই ছাপ দেগে দিলুম! কিন্তু তারপরও স্ত্রীলোকটি বোধহয় তাকে পুলিশের ভয় দেখায়। হত্যাকারী তখন হয়তো বলে, তুমি আমাকে পুলিশের ভয় দেখাচ্ছ? বেশ, তাহলে পুলিশের কাছে যে আঙুল দিয়ে আমাকে দেখিয়ে দেবে, তোমার সেই আঙুলই কেটে নিয়ে পুলিশের কাছে আমি উপহার পাঠাব। কিন্তু আঙুলটা পাঠাবার সময়ে সাবধানী হত্যাকারী উল্কিটা তুলে ফেলবার চেষ্টা করেছিল।
বড়সাহেব বললেন, প্রফেসর, এইবারে আপনি কবির মতো কল্পনার আশ্রয় নিয়েছেন। এসব স্বাভাবিক কথা নয়।
প্রফেসর হেসে বললেন, হ্যাঁ, আমার এ অনুমান মিথ্যা হতেও পারে। কিন্তু মনে রাখবেন, আমরা কোনও স্বাভাবিক হত্যাকারীর কীর্তি নিয়ে আলোচনা করছি না; কিন্তু সেকথা এখন থাক, আপনাকে আসল পথ তো আমি দেখিয়ে দিয়েছি। আপনি অস্ত্র-চিকিৎসকদের মধ্যেই হয়তো হত্যাকারীর সন্ধান পাবেন।
পুলিশের বড়সাহেবের হুকুমে তখনি দলে দলে ডিটেকটিভ ও গুপ্তচর, ভিয়েনার বিভিন্ন শবব্যবচ্ছেদাগারে ও অস্ত্র-চিকিৎসকদের বাড়ির দিকে ছুটল এবং প্রত্যেক ডাক্তারের গতিবিধির উপর তীক্ষ্ণদৃষ্টি রাখা হল। ভিয়েনার বিরাট জনসমুদ্রের মধ্যে পুলিশ এতক্ষণ পরে একটা যেন দ্বীপের মতো ঠাই খুঁজে পেলে, গোয়েন্দাদের আর দিশেহারার মতো হাবুডুবু খেতে হল না! এই খোঁজাখুঁজির ফলে কয়েকজন অসাধু ডাক্তার ধরা পড়ল বটে, কিন্তু আসল অপরাধী তখনও নিরুদ্দেশ হয়েই রইল।
তারপর একদিন একটি যুবক অস্ত্র-চিকিৎসক পুলিশের বড়সাহেবের কাছে এসে যা বললে তা হচ্ছে এই :
আসল অপরাধী কে তা আমি জানি না বটে, কিন্তু আমার মনে একটা সন্দেহের উদয় হয়েছে।
কিছুদিন আগে আমাদের হাসপাতালে, আনা উইস্ নামে একটি মেয়ে-ডাক্তার কাজ করতে আসে। আনা যত রোগী দেখত, তাদের সকলকেই বলত, ডা. স্মিটজ-এর কাছে গিয়ে অস্ত্র-চিকিৎসা করতে। অথচ ডা. স্মিটজ আমাদের হাসপাতালের দলভুক্ত নন। পরে জানা যায়, ডা. স্মিটজের সঙ্গে আনার বিয়ের কথা চলছে।
তারপর ডাক্তার-মহলে কানাঘুষায় শোনা গেল, ডাঃ স্মিটজ নাকি একই রোগীর উপরে অকারণে বারবার অস্ত্র-প্রয়োগ করে ডবল তে-ডবল ফি আদায় করেন। যেন তিনি খুব সহজেই তাড়াতাড়ি বড়লোক হয়ে উঠতে চান!
কিছুদিন পরে শুনলুম, আনার সঙ্গে ডা. স্মিটজের বিয়ের সম্পর্ক ভেঙে গেছে, তিনি বার্থা নামে আর-একটি মেয়ে-ডাক্তারকে বিয়ে করতে চান।
দিন কয়েক হল, আনা আমাদের হাসপাতালের কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে গিয়েছে। ডাঃ স্মিও এখন শহরের বাইরে গিয়েছেন, আর বার্থারও কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
গোয়েন্দারা এইবারে ডা. স্মিজের সন্ধান করতে লাগল।
স্মিটজের এক পরিচিত রোগী খবর দিলে, যে ডাক্তারকে সামার্লিং-এর ট্রেন ধরতে দেখেছে। সামার্লিং হচ্ছে, অস্ট্রিয়ায়ই একটি পাহাড়ে জায়গা, লোকে সেখানে হাওয়া বদলাতে যায়।
.
পাহাড়ের কোন নির্জন স্থানে একটি বাড়ি। গোয়েন্দারা সেইখানেই ডাঃ স্মিটজকে আবিষ্কার করলে।
তখন অনেক রাত হয়েছে, স্তব্ধতা ভেদ করে সশব্দে বইছে কনকনে ঠান্ডা বাতাস। অন্ধকার আকাশে একটা তারা পর্যন্ত উঁকি মারছে না। গোয়েন্দারা চুপি-চুপি বাড়ির দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই সভয়ে শুনতে পেলে, মৌন রাত্রি হঠাৎ কেঁপে উঠল স্ত্রী কণ্ঠের তীব্র ও তীক্ষ্ণ আর্তনাদে! কে যেন বিষম যন্ত্রণায় চেঁচিয়ে উঠেই আবার থেমে পড়ল।
আধ-অন্ধকারে একটা প্রকাণ্ড লম্বা-চওড়া মূর্তি আস্তে-আস্তে সদর দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এল–তার পিছনে পিছনে একটি স্ত্রীলোক।
একজন ডিটেকটিভ তাড়াতাড়ি এগিয়ে গিয়ে গম্ভীর স্বরে বললে, ডাক্তার, তুমি আমাদের বন্দি।
ডাক্তার এক লাফে পিছিয়ে গিয়ে বাড়ির দরজা আবার বন্ধ করবার চেষ্টা করলে, কিন্তু তার আগেই গোয়েন্দারা তাকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেললে। তখন আরম্ভ হল বিষম এক ধস্তাধস্তি। কিন্তু সেই বিপুলবপু মহা-বলিষ্ঠ ডাক্তারকে কাবু করা সহজ নয় দেখে, একজন গোয়েন্দা রিভলভারের বাঁট দিয়ে এত জোরে তার মাথায় আঘাত করলে যে, সে তখনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। তার সঙ্গিনী স্ত্রীলোকটিও ধরা পড়ল। সে হচ্ছে, বার্থা। ডাক্তারের নতুন বউ।
বাড়ির ভিতরের একটা ঘরে, অস্ত্রোপচারের টেবিলের উপরে পাওয়া গেল হতভাগিনী আনাকে অর্ধ-অচেতন অবস্থায়। তার দুই হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা, ইথারের গন্ধে ঘর পরিপূর্ণ।
কয়েক ঘণ্টা পরে আনা বললে, হ্যাঁ, ডা. স্মিটজ আমাকে বিয়ে করবেন বলে আমি তার কাছে গিয়ে অস্ত্র-চিকিৎসা করবার জন্যে রোগীদের পরামর্শ দিতুম। একই রোগীর দেহে অকারণে বারবার অস্ত্র চালিয়ে ডাক্তার অন্যায়রূপে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতেন।
তারপর ডাক্তার আমাকে ছেড়ে, বার্থাকে বিয়ে করতে চান। সেইজন্যে আমি রাগ করে বলি, তার অন্যায় চিকিৎসার কথা পুলিশের কাছে প্রকাশ করে দেব। ডাক্তারও তখন খাপ্পা হয়ে একদিন আমাকে ধরে জোর করে আমার হাতে উল্কির এক সাপ এঁকে দেন।
তারপরেও আমি পুলিশে খবর দিতে চাই শুনে, তিনি আমার কাছে মাপ চেয়ে অনুতপ্তভাবে বললেন, আচ্ছা, আমি তোমাকেই বিয়ে করব। কিন্তু বিয়ের আগে আমি। হপ্তাখানেকের জন্যে সামার্লিং-এ হাওয়া বদলাতে যেতে চাই, তুমিও আমার সঙ্গে চলো।
আমি খুব খুশি হয়ে বোকার মতো ডাক্তারের সঙ্গে এখানে চলে আসি। তারপর আমার এই দুর্দশা হয়েছে। ডাক্তার আর বার্থা দুজনে মিলে আমার দু-হাতের দুটো আঙুল কেটে নিয়েছে। আঙুল কেটে নিয়ে ডাক্তার আমাকে বলেছে, কালসাপিনি! তোমার আঙুলে কালসাপ এঁকে দিয়েছি তবু তোমার চৈতন্য হয়নি! আচ্ছা, ধীরে-ধীরে সমস্ত হাত কেটে নিয়ে আমি তোমার বন্ধু পুলিশকেই উপহার দেব।
আপনারা না এলে এই দানব আর দানবী আমার দেহকে খণ্ড খণ্ড করে আমাকে নিশ্চয়ই হত্যা করত।
ডা. স্মিটজের আর বিচার হল না। কারণ, গোয়েন্দার রিভলভারের চোটে তার খুলি ফেটে গিয়েছিল এবং তাতেই তার মৃত্যু হয়। বার্থা গেল জেলখানায়।
ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরের বাহাদুরিটা দেখলে তো? যেন মন্ত্রশক্তি বলেই শূন্যতার ভিতর থেকে সূত্র আবিষ্কার করে অনুমানে তিনি যা-যা বলেছিলেন, তার একটা কথাও মিথ্যা হল না এবং তিনি না থাকলে পুলিশ এ মামলার কোনওই কিনারা করতে পারত না।