দেবতাদের যিনি রাজা, তাঁহাকে বলে ইন্দ্র। তাঁহার কথা তোমরা অবশ্যই শুনিয়াছ। তাঁহার এক হাজার চক্ষু আর সবুজ রঙের দাড়ি ছিল। তাঁহার আসল নাম শত্রু, পিতার নাম কশ্যপ, রানীর নাম শচী, পুত্রের না জয়ন্ত, হাতির নাম ঐরাবত, ঘোড়ার নাম উচ্চৈঃশ্রবা, সারথির নাম মাতলি, সভার নাম সুধর্মা, বাগানের নাম নন্দন আর অস্ত্রের নাম বজ্র। তাঁহার সভায় গন্ধর্বেরা গান গাইত, অপ্সরারা নাচিত।
লোকে ভাবিত ইন্দ্র বড়ই সুখে থাকেন আর অনেক সময়ই যে তিনি খুব জাঁকজমকের ভিতর দিন কাটাইতেন, একথা সত্যও বটে। কিন্তু সময় সময় তাঁহাকে বেগও কম পাইতে হইত না। দেবতাদের সঙ্গে অসুরদের ভয়ানক শত্রুতা ছিল, আর সেই সূত্রে অসুরেরা মাঝে মাঝে ইন্দ্রকে বড়ই নাকাল করিত। দেবতা আর অসুরের যুদ্ধে একবার বৃত্র নামে একটা অসুর ইন্দ্রকে ধরিয়া গিলিয়া ফেলিয়াছিল। দেবতারা তখন অনেক বুদ্ধি করিয়া সেই অসুরটাকে ‘জ্বম্ভিকা’ অস্ত্র ছুঁড়িয়া মারেন, তাই ইন্দ্র রক্ষা পান, নচেৎ সে যাত্রা আর তাঁহার বিপদের সীমা ছিল না। জ্বম্ভিকা অস্ত্রের গুণ অতি আশ্চর্য। সে অস্ত্র গায়ে লাগিবামাত্র অসুরটা ভয়ানক হাই তুলিল, আর ইন্দ্র সেই ফাঁকে তাহার পেটের ভিতর হইতে বাহির হইয়া আসিলেন।
এই যুদ্ধ ভালো করিয়া শেষ হইতে না হইতেই আবার ইন্দ্রের এক নূতন বিপদ উপস্থিত হইল। পূর্বে কোন কারণে তাঁহার ব্রহ্মহত্যার পাপ হয়। বৃত্রের মৃত্যুর পরে সেই ব্রহ্মহত্যা তাঁহাকে তাড়াইয়া বেড়াইতে লাগিল। বেচারা ভয়ে অস্থির হইয়া যেখানেই পলাইতে যান, ব্রহ্মহত্যা তাঁহাকে তাড়াইয়া সেইখানে গিয়া উপস্থিত হয়। শেষে আর উপায় না দেখিয়া, তিনি একটা প্রকাণ্ড সরোবরের মধ্যে, পদ্মের মৃণালের ভিতরে গিয়া সূতা হইয়া লুকাইয়া রহিলেন। তখন কাজেই ব্রহ্মহত্যা ঠকিয়া গেল। কিন্তু, তথাপি সে তাঁহাকে সহজে ছাড়ে নাই, সে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ বৎসর সেইখানে তাঁহার অপেক্ষায় বসিয়াছিল।
সাড়ে তিন লক্ষ বছর তো আর একদিন দুইদিনের কথা নয়, দেবতার হিসাবেও তাহা এক হাজার বৎসর। কাজেই দেবতারা তাঁকে এতদিন দেখিতে না পাইয়া ব্যস্তভাবে তাঁহাকে খুঁজিতে লাগিলেন। শেষে ব্রহ্মার কথায় যদিও তাঁহার সন্ধান পাইলেন তথাপি তাঁহাকে ঘরে আনিতে সাহস পান নাই, কারণ ব্রহ্মহত্যা তখনও তাঁহার জন্য সেখানে বসিয়া আছে, সে তাহাকে সহজে ছড়িবে কেন? তখন দেবতারা পরামর্শ করিয়া স্থির করিলেন যে, কোনো পবিত্র নদীতে স্নান করাইয়া ইন্দ্রের শরীরের পাপ ধুইয়া ফেলিবেন, তাহা হইলেই ব্রহ্মহত্যা তাঁহকে ছড়িয়া দিবে। এই বলিয়া তাঁহারা ইন্দ্রকে গৌতমী নদীতে স্নান করাইতে গেলেন। সেখানে মহর্ষি গৌতমের আশ্রম ছিল। গৌতম যারপরনাই রাগিয়া তাহাদিগকে বলিলেন, “সে হইবে না, এই পাপীকে এখানে স্নান করাইলে আমি তোমাদিগকে শাপ দিয়া ভস্ম করিব! তোমরা শীঘ্র এখান হইতে যাও।”
এ কথায় দেবতারা নর্মদার জলে ইন্দ্রকে স্নান করাইতে গেলেন। সেখানে মাণ্ডব্য মুনির আশ্রম ছিল। মাণ্ডব্য মুনি বিষম ভূকুটির সহিত তাঁহাদিগকে বলিলেন, “এখানে যদি ইঁহাকে স্নান করাও তবে এখনি তোমাদের শাপ দিয়া ভস্ম করিব।”
যাহা হউক, শেষে দেবতারা অনেক স্তুতি মিনতি করায় মাণ্ডব্য ইন্দ্রকে সেখানে স্নান করাইতে দিলেন। তারপর তাঁহাকে গৌতমীতে নিয়ে গিয়াও স্নান করান হইল। ইহার পর আবার ব্রহ্মা তাঁহার কমণ্ডলুর জল দিয়া ইন্দ্রকে ধুইলেন, তবে সে যাত্রার মতো তিনি একটু নিশ্চিন্ত হইলেন।
বাস্তবিক, ইন্দ্র হওয়া আগাগোড়াই সুখের কথা ছিল না। কিন্তু, লোকে ভাবিত ইন্দ্র বড় সুখী। তাই অনেকে ইন্দ্র হইবার জন্য কঠোর তপস্যা করিত। সেজন্য কাহাকেও খুব তপস্যা করিতে দেখিলেই ইন্দ্র ভাবিতেন সর্বনাশ! এইবার বুঝি বা আমার কাজটি যায়!’ তখন তিনি লোকটির তপস্যা ভাঙ্গিয়া দিবার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করিতেন। কিন্তু, তাহা সত্ত্বেও মাঝে মাঝে এক এক জন লোক ইন্দ্র হইয়া যাইত!
নহুষ নামে এক রাজা একবার ইন্দ্র হইয়া কি হুলস্থুলই বাধাইয়া ছিলেন! উচ্চৈঃশ্রবা ঐরাবতে তাঁহার মন উঠিল না, তিনি বলিলেন, “আমি বড়-বড় মুনিদের ঘাড়ে চড়িয়া বেড়াইব!”
অমনি এক আশ্চর্য পালকি প্রস্তুত হইল, মুনিরা হইলেন তাহার বেহারা। নহুষ তাহাতে উঠিয়া বসিয়া মুনিঠাকুরদের উপরে অসম্ভব তম্বি জুড়িয়া দিলেন। সে বেচারদের গায়ে জোর কম। ফলমূল খাইয়া থাকেন, পালকি বহার অভ্যাস কাহারও নাই, তাঁহাদের কাজে নহুষের মন উঠিবে কেন? নহুষ তখন বেজায় চটিয়া মহর্ষি অগস্ত্যের মাথায় ধাঁই শব্দে এক প্রচণ্ড লাথি লাগাইয়া দিলেন। তার ফলও পাইলেন হাতে হাতেই কেননা, তাহার পরমুহূর্তেই মুনির শাপে তাঁহার সেই সুখের ইন্দ্রগিরি ঘুচিয়া গেল, আর তিনি এক প্রকাণ্ড সাপ হইয়া হিমালয়ের নিকটে পড়িয়া গড়াগড়ি যাইতে লাগিলেন!
আর একবার অসুরদের সঙ্গে দেবতাদের ভীষণ যুদ্ধ চলিয়াছে, কিন্তু কেহই জয়লাভ করিতে পারিতেছে না। সেই সময়ে পৃথিবীতে রজি নামে একজন অতিশয় ক্ষমতাশালী রাজা ছিলেন। দুই দলই ভাবিলেন, “এই রজিকে আনিয়া আমাদের সঙ্গে জুটাইতে পারিলে নিশ্চয় আমরা জিতিব।”
এই ভাবিয়া দেবতারা রজিকে আসিয়া বলিলেন, “হে রাজন, তুমি আমাদের সঙ্গে মিলিয়া অসুর বধ কর, নহিলে আমরা কিছুতেই তাহাদের সঙ্গে পারিয়া উঠিতেছি না।” রজি বলিলেন, “আপনারা যদি আমাকে ইন্দ্র করেন, তবে আমি আপনাদের সঙ্গে মিলিতে পারি।”
দেবতারা বলিলেন, “অবশ্য তোমাকে আমরা ইন্দ্র করিব, তুমি শীঘ্র আইস!”
এই বলিয়া দেবতারা সবে চলিয়া গিয়াছেন, অমনি অসুরেরা আসিয়া রজিকে বলিল, “মহারাজ, আপনি আমাদের পক্ষ হইয়া যুদ্ধ করুন।” রজি দেবতাদিগকে যেমন বলিয়াছিলেন, তেমনি অসুরদিগকেও বলিলেন, “আপনারা যদি আমাকে ইন্দ্র করেন, তবে আমি আপনাদের কথায় রাজি আছি!”
কিন্তু, অসুরেরা সে কথায় অতিশয় ঘৃণার সহিত বলিল, “এমন সাহায্যের আমাদের প্রয়োজন নাই। আমাদের ইন্দ্র প্রহ্লাদ আর কোনো ইন্দ্র আমরা চাই না। আপনি না হয় আমাদের পক্ষে নাই আসিলেন।”
তখন রজি দেবতাদের সঙ্গে জুটিয়া ভয়ানক রাগের সহিত অসুর মারিতে আরম্ভ করিলেন, আর তাহাতে অতি অল্পদিনের মধ্যেই দেবতাদের জয়লাভ হইল। ইন্দ্র দেখিলেন, এখন তো বড়ই বিপদ উপস্থিত, রজিকে এখন সিংহাসন ছাড়িয়া দিতে হইবে। তাই তিনি রজি নিজে কিছু বলিবার আগেই তাঁহাকে বলিলেন, “মহারাজ! লোকে বলে, যে ভয় হইতে রক্ষা করে, সে পিতা। আপনি আমাকে ভয় হইতে উদ্ধার করিয়াছেন, কাজেই আপনি আমার পিতা হইলেন। আর তাহাতেই আপনি ইন্দ্রও হইলেন, কেননা ইন্দ্রের পিতা হইলে আর ইন্দ্র হওয়ার চেয়ে বেশি বৈ কম কি হইল?”
রজিও ইন্দ্রের সেই ফাঁকিতে ভুলিয়া আহ্লাদের সহিত দেশে ফিরিয়া আসিলেন, স্বর্গে রাজা হওয়ার কথা আর মুখে আনিলেন না।
এই রজির পাঁচশত মহাবীর পুত্র ছিল। রজির মৃত্যুর পরে এই পাঁচশত বীর মিলিয়া যুক্তি করিল, “দেবতারা ফাঁকি দিয়া আমাদের পিতাকে ইন্দ্রপদ হইতে বঞ্চিত করিয়াছিল, আইস, আমরা তাহার শোধ লইব!”
এই বলিয়া তাহারা দেবতাদিগের সহিত ঘঘারতর যুদ্ধ আরম্ভ করিল, আর দেখিতে দেখিতে দলবল সহিত ইন্দ্রকে তাড়াইয়া দিয়া স্বর্গ আর পৃথিবী দুইই দখল করিয়া বসিল।
এই পাঁচশত ভাই যেমন বীর, তেমনি যদি বুদ্ধিমান হইত তবে আর ইন্দ্রের নিজ রাজ্য ফিরিয়া পাইবার কোনো উপায়ই থাকিত না। কিন্তু ইহারা বুদ্ধিমানের মতন ধর্মপথে থাকিয়া রাজ্যপালন করার বদলে, নানারূপ অসৎ কার্যে নিজেদের বিষয় ও বল নষ্ট করিয়া ফেলিল। তাহার ফলে, অল্পদিনের ভিতরেই ইন্দ্র তাহাদিগকে আড়াইয়া আবার আসিয়া স্বর্গের রাজা হইলেন।
ইন্দ্র হওয়ার যে কি সুখ, তাহার সম্বন্ধে আর একটা মজার গল্প আছে। একবার অসুরেরা ঘোরতর যুদ্ধে দেবতাদিগকে যারপরনাই ব্যস্ত করিয়া তুলিলে, তাঁহারা সূর্যবংশের রাজা পরঞ্জয়কে আসিয়া বলিলেন, “মহারাজ, তুমি আমাদের হইয়া অসুরদের সঙ্গে যুদ্ধ কর।”
পরঞ্জয় কহিলেন, “আমি যুদ্ধ করিতে প্রস্তুত আছি যদি আপনারা আমার একটি কথায় রাজি হন। আপনাদের যিনি ইন্দ্র, আমি তাঁহার কাঁধে চড়িয়া যুদ্ধ করিব।”
এ কথায় ইন্দ্র আর অন্য দেবতারা সকলেই বলিলেন, “হাঁ হাঁ, তাহাই হইবে, তুমি আইস!”
তারপর আবার যুদ্ধ আরম্ভ হইলে, ইন্দ্র বিশাল এক ষাঁড় সাজিয়া পরঞ্জয়কে কাঁধে করিয়া লইলেন, পরঞ্জয়ও তাহাতে ভারি খুশি হইয়া দুই দণ্ডের মধ্যে অসুর মারিয়া শেষ করিলেন। সেই ষাঁড়ের ‘ককুদ্’ অথবা কাঁধে চড়িয়া যুদ্ধ করায় তখন হইতে পরঞ্জয়ের নাম হইল ‘ককুৎস্থ’। দশরথের পুত্র রাম এই ককুৎস্থ বংশের লোক ছিলেন বলিয়া, তাঁহাকেও অনেক সময়ে বলা হয় ‘কাকুৎস্থ’।
ইন্দ্রগিরির মজার আর একটা গল্প বলিয়া শেষ করিব। একজন অতি বিখ্যাত মুনি ছিলেন, তাঁহার নাম আত্রেয় (অত্রি মুনির পুত্র)। ঠাকুরটি বিস্তর যাগযজ্ঞ করিয়াছিলেন, আর তাহাতে তাঁহার ইচ্ছামতো সংসারের সর্বত্র চলাফেরার ক্ষমতা জন্মিয়াছিল।
একদিন তিনি বেড়াইতে বেড়াইতে ইন্দ্রের সভায় আসিয়া উপস্থিত হইলেন। সেখানকার শোভা দেখিয়া, সেখানকার গীত-বাদ্য শুনিয়া, আর সেখানকার ময়রাদের তৈরি মিষ্টান্ন খাইয়া ঠাকুরের মন এমনই ভুলিয়া গেল যে, তিনি দিনরাতই কেবল ভাবিতে লাগিলেন, ‘আহা! এই তো সুখ, এমনিই তো চাই!’
তারপর আশ্রমে ফিরিয়া আর তাঁহার নিজের কুঁড়েঘরটি কিছুতেই তাঁহার পছন্দ হয় না। ব্রাহ্মণীকে ডাকিয়া বলিলেন, “ওগো! এসব কি ছাই খাবার আমাকে খাইতে দাও? এসব কি খাইতে ভালো লাগে? ইন্দ্রের বাড়িতে যে চমৎকার মিঠাই খাইয়া আসিয়াছি, ফলমূলের তরকারি কিছুতেই তেমন করিতে পারিবে না!”
এই বলিয়া তিনি বিশ্বকর্মাকে ডাকিয়া হুকুম দিলেন, “আমার এই আশ্রমটিকে ঠিক ইন্দ্রের পুরীর মতো করিয়া দাও। নইলে তোমাকে শাপ দিয়া ভস্ম করিব! ঠিক তেমনি বাড়ি, তেমনি সভা, তেমনি বাগান, তেমনি হাতি, তেমনি ঘোড়া, তেমনি ঝাড়-লণ্ঠন, তেমনি গান-বাজনা, তেমনি মিঠাই-মণ্ডা, লোকজন—সব অবিকল চাই! খবরদার! যেন কোনো কথার একটু তফাত হয় না!”
শাপের ভয়ে বিশ্বকর্মা তখনই তাড়াতাড়ি সেখানে এক ইন্দ্রপুরী তয়ের করিয়া দিলেন। মুনি ঠাকুর সেই পুরীতে থাকেন, আর বলেন, “আহা এই তো সুখ! এমনই ত চাই।”
এমনিভাবে কিছুদিন যায়। ইহার মধ্যে অসুরেরা সেই পুরীর দিকে ভ্রুকুটি করিয়া তাকায় আর বলে, “দেখ ভাই, ইন্দ্র বেটা স্বর্গ ছাড়িয়া চুপিচুপি পৃথিবীতে আসিয়া ঘর বাঁধিয়াছে। চল, এই বেলা উহাকে ধরিয়া বৃত্রকে মারিবার সাজাটা ভালোমতে দিই!”
অমনি দলে দলে অসুর, “ইন্দ্র বেটাকে মার!” “ইন্দ্র বেটাকে মার!” বলিতে বলিতে আসিয়া সেই পুরী ঘিরিয়া বসিল।
মুনিঠাকুর মনের সুখে খাটের উপর বসিয়া আছেন, ইহার মধ্যে অসুরদের বিকট চীৎকারে তাঁহার প্রাণ উড়িয়া গেল। দেখিতে দেখিতে লাখে লাখে শেল, শূল, মুষল, মুদ্গর, গাছ, পাথর, আসিয়া তাঁহার সাধের পুরী চুরমার করিয়া দিতে লাগিল। দু-একটা তীরের খোঁচা যে না খাইলেন তাহাও নহে।
তখন তিনি তাড়াতাড়ি কাঁপিতে কাঁপিতে অসুরদের সামনে আসিয়া জোড়হাতে বলিলেন, “দোহাই বাবা, আমি ইন্দ্র নহি! আমি মুনি, ব্রাহ্মণ, অতি নিরীহ দীন হীন মানুষ! আমার উপরে তোমাদের এত ক্রোধ কেন?”
অসুরেরা বলিল, “ইন্দ্র নহ, তবে ইন্দ্র সাজিয়াছ কেন? শীঘ্র তোমার এসব সাজগোজ দুর করিয়া দাও।”
মুনি বলিলেন, “এই যে বাপু! এক্ষুণি আমি এসব দুর করিয়া দিতেছি। আমার নিতান্তই মাথা খারাপ হইয়াছিল তাই এমন বেকুবী করিতে গিয়াছিলাম। আর কখনো এমন কাজ করিব না।”
তখন আবার বিশ্বকর্মার ডাক পড়িল।
বিশ্বকর্মা আসিলে মুনি বলিলেন, “ভাই! শীঘ্র এসব দুর করিয়া আমার সেই আশ্রম আবার আনিয়া দাও, নহিলে তো অসুরের হাতে আমার প্রাণ যায় দেখিতেছি!”
বিশ্বকর্মা দেখিলেন মুনির বড়ই বিপদ, কাজেই তিনি তাঁর কথামতো কাজ করিতে আর বিলম্ব করিলেন না। দেখিতে দেখিতে সেই সোনার পুরীর জায়গায় আবার কুঁড়েঘর আর বন হইল। অসুরদেরও রাগ থামিল, মুনিরও বিপদ কাটিল বিশ্বকর্মাও হো হো শব্দে হাসিতে হাসিতে ঘরে চলিয়া গেলেন।