ব্রতকাল ও ব্রতচারিণী—পুণ্যি-পুকুর ব্রতও নিতে হয় চৈত্র সংক্রান্তিতে; সেদিন থেকে বৈশাখ মাসের শেষ দিন অবধি রোজ সকালবেলায় ব্রতপালন করে যেতে হয়। পরপর চার বৎসর ব্রতপালনের শেষে হয় ব্রত উদযাপন। ব্রত উদযাপনের সময় ব্রাহ্মণ ভোজন করিয়ে ষোড়শদান দক্ষিণার সঙ্গে ব্রাহ্মণকে দিতে হয় সোনার বেল (অভাবে কাঞ্চন-মূল্য)। কোথাও কোথাও চারজন ব্রাহ্মণকে খাওয়ানোর বিধিও আছে।
ব্রত দ্রব্যাদি: শ্বেত পুষ্প, চন্দন, দূর্বা, আর একঘটি জল।
ব্রতানুষ্ঠান: পুকুরপাড়ে কি বাড়ির উঠোনে একহাত চৌকো পুকুর করবে। শানের মেজেয় পুকুর করতে হলে আল দেবে, গর্ত খুঁড়তে হবে না। পুকুরে করতে হবে চারটে ঘাট; ঘাটের দুই পাশে কড়ি সাজিয়ে দেবে। মাঝখানে পুঁতবে একটি তুলসী গাছ। (অনেকে ডাল আর পাতা শুদ্ধ বেলও দেয়)।
তারপর পূর্বমুখ কি উত্তরমুখ হয়ে বসে মন্ত্র পড়ে গাছে আর পুকুরে একঘটি করে জল ঢালবে। গাছে জল ঢালবার মন্ত্র:
তুলসী তুলসী নারায়ণ।
তুমি তুলসী বৃন্দাবন।।
তোমার মাথে ঢালি জল।
অন্তিমকালে দিও স্থল।।
পুকুরে জল ঢালবার মন্ত্র:
পুণ্যি-পুকুর পুষ্পমালা।
কে পুজেরে দুপুর বেলা।।
আমি সতী লীলাবতী।
সাত ভেয়ের বোন ভাগ্যবতী।।
তারপর মন্ত্র পাঠ করে তিনবার পুকুরে ফুল, চন্দন, আর দূর্বা দেবে।
ফুল-চন্দন-দূর্বা দিবার মন্ত্র:
এ পূজলে কী হয়।
নির্ধনীর ধন হয়।।
সাবিত্রী-সমান হয়।
স্বামী আদরিণী হয়।।
স্বামীর কোলে পুত্র দোলে।
মরণ হয় যেন একগলা গঙ্গাজলে।।
এবার গলায় কাপড় দিয়ে প্রণাম করে ব্রত সমাপন করবে।
চতুর্থ বৎসরে ব্রত উদযাপনের সময় এক কাহন কড়ি দিতে হয়; সে কড়ি ভাই পেয়ে থাকে।
পুণ্যি-পুকুর ব্রত সমাপ্ত।