আলুকাবলি

সকালবেলায় বেড়াতে বেরিয়ে প্রোফেসার গড়গড়ি দেখতে পেলেন, সামনের ছোট মাঠটার ভেতরে দুটি ছেলে মারামারি করছে।

দুজনকেই স্কুলের ছাত্র বলে মনে হল। চৌদ্দ-পনেরো বছরের মতো বয়েস হবে। একটি বেশ গাঁট্টাগোট্টা জোয়ান, আর একটি রোগাপটকা। এসব ক্ষেত্রে যা হয়, রোগা ছেলেটিই মার খাচ্ছিল, জোয়ানটি তাকে ইচ্ছামতন পিটিয়ে যাচ্ছিল।

আর কেউ হলে মাঝে পড়ে থামিয়ে দিত, কিন্তু প্রোফেসার গড়গড়ি তা করলেন না। অনেকদিন তিনি বিলেতে ছিলেন। সে-দেশের পথে-ঘাটেও ছেলেদের তিনি মারামারি করতে দেখেছেন। আর এও দেখেছেন–ওপর-পড়া হয়ে আগে থেকেই কেউ থামিয়ে দেয়

–একজন সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেলে, জয়-পরাজয়ের একটা মীমাংসা হলে, তখনই তারা ছাড়িয়ে দিয়ে বলে, এখন সব মিটে গেছে, এবার বন্ধুর মতো হ্যান্ডশেক করে বাড়ি চলে যাও।

সুতরাং প্রোফেসার গড়গড়ি মোটা ছড়িটা হাতে নিয়ে, একটু দূরে দাঁড়িয়ে, মন দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন। রোগা ছেলেটি এখনও হার মানেনি, প্রচুর মার খেয়েও সমানে হাত চালিয়ে যাচ্ছে, অতএব এখনও তাঁর কিছু করবার নেই। সময় হলে তবেই তিনি আসরে নামবেন।

 

 

নতুন বাড়ি করে এই পাড়ায় তিনি এসেছেন মাত্র দিন তিনেক হল। প্রতিবেশীদের সঙ্গে বলতে গেলে আলাপই হয়নি, আর পাড়ার ছেলেরা তো তাঁকে চেনেই না। যদি চিনত তা হলে জানতে পারত, এই লম্বা রোগা মাঝবয়েসী লোকটির শরীর একেবারে ইস্পাতে গড়া। দুহাতে তিনি সিংহের শক্তি ধরেন; জানতে পারত, সোজা খাড়া শরীরটার মতোই তাঁর মনের মধ্যেও কোনও ঘোর-প্যাঁচ নেই। প্রোফেসার গড়গড়ি ন্যায়বিচার পছন্দ করেন আর সেকাজটা চটপট সেরে ফেলাই তাঁর অভ্যাস।

তাঁর ন্যায়বিচারের একটা নমুনা দিই। প্রোফেসার গড়গড়ি মোটামুটি অবস্থাপন্ন লোক, কিন্তু বাজে খরচ ভালোবাসেন না, মোটা চালে চলেন, ট্রেনে থার্ড ক্লাসে ওঠেন। সেবার কোন একটা স্টেশন থেকে রাত আটটা নাগাদ গাড়িতে উঠেছেন। ট্রেনে খুব একটা ভিড় ছিল তা নয়, সবাই-ই বসে যেতে পারে, তবু কয়েকজনকে দাঁড়িয়ে যেতে হচ্ছে। কারণটা আর কিছুই নয়–একটি দশাসই চেহারার লোক একখানা গোটা বেঞ্চি জুড়ে পরম আরামে লম্বা হয়ে রয়েছে।

রাত আটটার সময় একজন বয়স্ক লোকের কিছুতেই এ-ভাবে শুয়ে পড়া উচিত নয়–একথা প্রোফেসার গড়গড়ির মনে হল। মনে আরও অনেকেরই হয়েছিল, কিন্তু লোকটির ভীমের মতো চেহারা আর প্রকাণ্ড গোঁফজোড়া দেখে কেউ আর তাকে ঘাঁটাতে সাহস করেনি নির্বিবাদেই চুপচাপ দাঁড়িয়েছিল। প্রোফেসার গড়গড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে রাজি হলেন না। লোকটাকে একটু ধাক্কা দিয়ে ডাকলেন :এ জী।

লোকটা চোখ পাকিয়ে তাকালো। বললে, কেয়া?

প্রোফেসার গড়গড়ির হিন্দী ভালো আসে না। তবু যতটা পারেন সাজিয়ে গুজিয়ে, বেশ গরম গলায় বললেন, আপ কি চারঠো টিকিট কিয়া হ্যায়?

লোকটি ভুরু কুঁচকে বললে, কেয়া মতলব?

মতলব এই হ্যায় কি, চারঠো টিকিট নেহি কিয়া তো চার আদমির জায়গা দখল করকে কেন শুয়ে পড়া হ্যায়। উঠিয়ে হামলোগ ভি বৈঠেঙ্গে।

লোকটি সংক্ষেপে বললে, তবিয়ত খারাপ হ্যায়।

তবিয়ত খারাপ? দেখকে তো সে রকম মনে নেহি হোতা হ্যায়। বেশ তাগড়াই চেহারাই তো মালুম হচ্ছে। কেয়া বিমার? বলেই প্রোফেসার গড়গড়ি তার গায়ে হাত দিলেন : শরীর তো বেশ ঠাণ্ডা–বোখার-টোখার তো শুরু নেহি হুয়া।

লোকটা যদি বলত যে পেটে ব্যথা-ট্যথা কিছু হচ্ছে, তা হলে–মনে-মনে সন্দেহ থাকলেও প্রোফেসার গড়গড়ি সেটা বিশ্বাস করতে রাজি হতেন। কিন্তু দশাসই লোকটা সেদিক দিয়েই গেল না। গড়গড়ির হাতটা গায়ের ওপর থেকে ছুঁড়ে দিয়ে বললে, যাঃ–ভাগ। হাম শুতে রহেঙ্গে–হামারা খুশি।

 

 

শুতে রহেঙ্গে? আপকো খুশি? প্রোফেসার গড়গড়ি বললেন, তা হলে প্ল্যাটফর্মে গিয়েই শুয়ে থাকা হোক, সেখানে অনেক জায়গা হ্যায়।

বলেই, আর এক সেকেন্ডও দেরি না করে–লোকটিকে সোজা পাঁজাকোলা করে তুলে ফেললেন আর পত্রপাঠ তাকে প্ল্যাটফর্মে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন কম্বল-টম্বল সবসুদ্ধুই একেবারে।

গাড়িসুষ্ঠু লোক থ! যেন কিছুই হয়নি, এইভাবে বেঞ্চিতে বসে পড়ে প্রোফেসার গড়গড়ি ধীরে সুস্থে একটা চুরুট ধরালেন, অন্য যাত্রীদের ডাক দিয়ে বললেন, দাঁড়িয়ে কেন আপনারা? বসুন–জায়গা তো রয়েছে।

আর লোকটি? প্ল্যাটফর্মে খানিকক্ষণ হাঁ করে বসে থেকে, গায়ের ধুলো ঝেড়ে, একটু খোঁড়াতে খোঁড়াতে উঠে–সেই-যে কামরার হাতল ধরে দাঁড়িয়ে রইল আর ভেতরমুখো হল না।

প্রোফেসার গড়গড়ি এইরকম ন্যায়পরায়ণ লোক। বাড়ির গোয়ালা নিয়মিত দুধে জল দিচ্ছিল–অল্প-স্বল্প ওরা দেয়ই, গড়গড়ি কিছু মাইন্ডও করেননি। কিন্তু তাঁকে চুপচাপ দেখে গোয়ালার সাহস বেড়ে গেল। শেষ পর্যন্ত দুধটা শুধু রইল রঙেই বাকিটা স্রেফ কপোরেশনের বিশুদ্ধ কলের জল।

তখন প্রোফেসার গড়গড়ি একদিন গোয়ালাকে ডেকে অনেক সদুপদেশ দিলেন। বললেন, অতি লোভ ভালো নয়, তার ফল ভবিষ্যতে খারাপ হয়। গোয়ালা মন দিয়ে সব শুনে মাথা নেড়ে চলে গেল আর পরের দিনই জলের মাত্রা আরও একটু বাড়িয়ে দিলে।

অগত্যা প্রোফেসার গড়গড়িকে ন্যায় বিচারের দায়িত্বটা নিতেই হল। তিনি একদিন গোয়ালাকে জাপটে ধরলেন, তারপর দারুণ শীতের সকালে বাড়ির চৌবাচ্চা থেকে পাক্কা তিন ঘটি কনকনে জল গোয়ালাকে জোর করে গিলিয়ে দিয়ে বললেন, নিজেই দ্যাখো এবার, জল খেতে কেমন লাগে।

 

 

গোয়ালা পালিয়ে গেল, পরদিন এল আর এক নতুন গোয়ালা। কিন্তু এর পর থেকে গড়গড়ি একেবারে নির্জলা খাঁটি দুধ পেতে লাগলেন।

এ-হেন ন্যায়পরায়ণ লোক দুটি ছেলেকে মারামারি করতে দেখে চট করে কিছু করে বসবেন, এমন হতেই পারে না। হাতের মোটা ওয়াকিং স্টিকটার ওপর ভর করে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তিনি দেখতে লাগলেন, ব্যাপারটা কত দূর গড়ায়।

কতদূর আর গড়াবে! একটু পরেই জোয়ান ছেলেটা রোগা ছেলেটিকে চিত করে ফেলে তার বুকে চড়ে বসল। তারপর যখন জুত করে আরও মারতে যাচ্ছে, তখন গড়গড়ি একটা হ্যাঁচকা টান দিয়ে বিজয়ীকে তুলে আনলেন। বললেন, ব্যাস, হয়ে গেছে। এইবার শেক-স্যান্ড করো–তারপর সোজা বাড়ি চলে যাও।

মোটা ছেলেটা তো আর ইংরেজের বাচ্চা নয় যে এসব কথা সে বুঝবে! সে পালটা চোখ পাকিয়ে বললে, আপনি কে মোসাই ফরফর করতে এসেছেন? আমি ওর বদন বিগড়ে দেব! আলুকে ও এখনও চেনে না।

ছেলেটির মেজাজ দেখে প্রোফেসার গড়গড়ি বেশ কৌতূহল বোধ করলেন। ওঃ, তোমার নাম বুঝি আলু? তুমি বুঝি খুব বিখ্যাত লোক?

আলু চোখ বাঁকা করে এমন ভাবে তাকাল–যেন সম্রাট আলেকজান্ডারকে প্রশ্নটা করা হয়েছে।

মোসাই বুঝি অন্য পাড়ার লোক?

ছিলুম আগে। এখন দিন তিনেক হল তোমাদের পাড়ার বাসিন্দে হয়েছি।

অ।–আলু চিবিয়ে চিবিয়ে বললে, তাই আমার নাম শোনেননি এখনও। শুনবেন শুনবেন, আস্তে আস্তে শুনবেন।

 

 

বেশি শোনবার দরকার নেই, এতেই বোধহয় তোমাকে চিনতে পারছি। তা মারামারি করছিলে কেন এর সঙ্গে?

মারামারি! ফুঃ! আলু যেন কথাটা ফুঁয়ে উড়িয়ে দিলে : ওই ফড়িংটার সঙ্গে মারামারি করব? পিটছিলুম মোসায়, হাতের সুখ করে নিচ্ছিলুম। ফড়িংটার সাহস দেখুন–পালটা লড়ে যাচ্ছে আমার সঙ্গে। আপনি চলে যান মোসাই, আমি ওকে তুলোধোনা করে দিচ্ছি।

গড়গড়ি চেয়ে দেখলেন রোগা ছেলেটির দিকে। ঘাসের ওপর বসে পড়ে সে হাঁপাচ্ছে। তার শার্ট ছেঁড়া, ঠোঁটের কোণে রক্ত। চোখে একটু জলও দেখা গেল যেন।

গড়গড়ি বললেন, তোমার নাম কী?

রোগা ছেলেটা গোঁজ হয়ে রইল, জবাব দিলে না। আলু বললে, ও? ওর নাম কাবুল।

তাই বুঝি আলু আর কাবুলে মিলে আলকাবলি তৈরি হচ্ছিল?

হে-হে-হেঃ!–আলু হেসে উঠল : মোসাই তো বেশ মজা করে কথা বলতে পারেন। তা স্যারের নামটা কী? বলে পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরাল। প্রোফেসার গড়গড়ি আড়চোখে একবার চেয়ে দেখলেন কেবল।

রোগা ছেলেটি–অর্থাৎ আলুকাবলির কাবুল তখন উঠে চলে যাওয়ার উপক্রম করছিল। প্রোফেসার গড়গড়ি মোটা গলায় বললেন, দাঁড়াও হে ছোকরা, দরকারি কথা আছে। তাঁর গলার আওয়াজে এমন একটা কিছু ছিল যে ছেলেটা থমকে গেল, এমন কি বেপরোয়া আলুর পর্যন্ত হাতটা সিগারেটসুদ্ধু কেঁপে উঠল একবার।

 

 

আলু বললে,বেশ জবরদস্ত গলাটি তো মোসাইয়ের। তা নামটা বললেন না?

হবে এখন, নামের জন্যে ভাবনা কী!–গড়গড়ি হাসলেন : আমাকেও আস্তে আস্তে চিনবে। তা ওকে তুমি মারছিলে কেন?

মারব না?–আলু গড়গড়ির মুখের ওপরেই একরাশ ধোঁয়া ছেড়ে দিলে : ও আমাকে গেরাজ্যি করে না।

করে না নাকি?

একেবারে না। ক্লাসের ফার্স্ট বয় কিনা, অহঙ্কারে পা পড়ে না মাটিতে, আমি ফেল করি, টুকলিফাই করি–এসব বলে বেড়ায়।

করিসই তো ফেল, টুকলিই তো করিস–কাবুল কাঁদো কাঁদো গলায় বললে।

আলু প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়তে যাচ্ছিল তার ওপর–গড়গড়ি মাঝখানে এসে দাঁড়ালেন। বললেন, হচ্ছে, হচ্ছে, ঠ্যাঙানি তো আর পালিয়ে যাচ্ছে না। কাবুল, ডোন্ট ডিসটার্ব আলুকে বলতে দাও।

আলু বললে, ওসবে আমি গ্রাহ্যি করি না মোসাই। আমার বাপের পয়সায় আমি ফেল করি, হাতের জোরে টুকলি করি, ভয় পাই নাকি? কথাটা কী জানেন, ও আমাকে একদম খাতির করে না।

তোমাকে খাতির করা দরকার বুঝি?

দরকার নয়? আমার গায়ে জোর আছে। পাড়ার ছেলে বুড়ো আমার নামে কাঁপে।

ও কাঁপে না?

না। কাল সিনেমায় যাব বলে ওর কাছে একটা টাকা চেয়েছিলুম, দেয়নি। পরশু বলেছিলুম, চপকাটলেট খাওয়া-বলেছে গুণ্ডাকে আমি খাওয়াই না। টিংটিঙেটার আস্পর্দা দেখেছেন?- বলেই আবার সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ল।

গড়গড়ি বললেন, ঠিক।

ঠিক না?–আলু মুরুব্বিয়ানা চালে হাসল : মোসাই দেখছি বেশ সমঝদার লোক।

গড়গড়ি এবার কটমট করে তাকালেন কাবুলের দিকে। দ্যাখো ছোকরা, ক্লাসের ফার্স্ট বয় হলেই হয় না। গায়ে যদি জোর না থাকে, তা হলে জোয়ানদের কথা মানতে হবে, আর নইলে মার খেতে হবে। দুনিয়ায় এই নিয়ম।

 

 

কাবুলের চোখ জ্বলে উঠল : দুনিয়া বুঝি গুণ্ডাদের জন্যে?

না, শক্তিমানের জন্যে।–গড়গড়ির স্বর কঠোর হল : মন আর শরীর দুটোই শক্ত হওয়া দরকার। শুধু ফার্স্ট বয় হলেই চলে না। মাসলও জোরালো করতে হয়। হয় গুণ্ডার কাছে হার মানো নইলে গুণ্ডাকে ঠাণ্ডা করো–আর কোনও রাস্তা নেই। তোমাকে আলু পিটিয়েছে, বেশ করেছে। ইউ ডিজার্ভ ইট।

কাবুল আবার বোঁ বোঁ করে চলে যাচ্ছিল, গড়গড়ি সেই ভয়ঙ্কর গলায় বললেন, দাঁড়াও।

কাবুল চমকে দাঁড়িয়ে পড়ল, এমন কি গলার আওয়াজটা আলুরও ভালো লাগল না। সিগারেটে আর একটা সুখের টান দিয়ে বললে, মোসায়ের গলাটি বেশ জোরালো। কিন্তু কথাটা বলেছেন বেড়ে। জোর যার মুল্লুক তার।

গড়গড়ি বললেন, ঠিক।

আলু উৎসাহ পেয়ে বললে, যার জোর আছে তাকে মানতে হয়। নইলে ঠ্যাঙানি খেতে হয়।

গড়গড়ি বললেন, তা-ও ঠিক।

তা হলে মোসাই কথাটা বুঝিয়ে দিন ওদিকে। আজ আপনি এসেছেন বলে পার পেয়ে গেল,নইলে আমি ওকে

গড়গড়ি বাধা দিয়ে বললেন, বলতে হবে না। কিন্তু তোমাকেও যে একটা কথা বোঝাবার আছে হে আলু।

আলু খিকখিক করে হেসে বললে, আমাকে।

হ্যাঁ, তোমাকে। আমি যদি বলি, আমার গায়ে তোমার চেয়ে বেশি জোর আছে-মানবে তো আমাকে?

কী বললেন?

ঠিক বলছি, আমার গায়ে বেশি জোর আছে, সুতরাং তুমি আমাকে মেনে চলবে। কাজেই আমার মতো বয়স্ক লোকের মুখের সামনে তুমি যে অসভ্যের মতো কথা বলছ, বাঁদরের মতো সিগারেট ধরিয়েছ, তার জন্যে এক্ষুনি তোমায় ক্ষমা চাইতে হবে।

ক্ষমা চাইব?–আলু হা হা করে হেসে উঠল : হাতি ঘোড়া গেল তল, মোসা বলে কত জল! আপনার মতো কত মক্কেলকে আমি ইট মেরে–

আর বলতে হল না। এইবার ন্যায়বিচারের সময় হয়েছে।

হাতের লাঠিটা ফেলে দিয়ে গড়গড়ি বললেন, আমার জোর পরখ করতে চাও বুঝি? বেশ, বেশ!

তারপর দুম দুম শব্দে দুটি কিল পড়ল আলুর পিঠে। মাত্র দুটি। আলু তাতেই আলুর দম–একেবারে চোখ উলটে বসে পড়ল ঘাসের ওপর–মনে হল সে গুঁড়ো হয়ে গেছে!

গল্পটা এখানে শেষ নয়।

আলু অর্থাৎ আলোক চৌধুরী আজকাল প্রোফেসার গড়গড়ির সব চেয়ে ভক্ত শিষ্য। পাড়ার গুণ্ডাদমন সমিতির সে ক্যাপ্টেন, লোকে বলে, খাসা ছেলে। এমন কি টুকলি না করেই, সে ফার্স্ট ডিভিশনে হায়ার সেকেন্ডারি পাশ করেছে এবার।

আর কাবুল–মানে স্কলারশিপ পাওয়া জুয়েল ছাত্র কমল গুপ্ত, এখন তার প্রাণের বন্ধু। কমল গুপ্তের হাতের মাসলও এখন দেখবার মতো–আলোক আর কমল পাঞ্জা লড়লে কে জিতবে, জোর করে বলা শক্ত।


© 2024 পুরনো বই